বিদেশি ডলার :
ডলার হলো বিশ্বর বিভিন্ন দেশের মুদ্রার নাম।বিভিন্ন দেশে ডলার এর মূল্য ও ব্যবহার ভিন্ন হয়। সবথেকে পরিচিত ডলার হলো মার্কিন ডলার অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর এই ডলার ব্যবহার করা হয়। সারা পৃথিবীতে বেশির ভাগ জায়গায় এর ব্যবহার হয়। বিভিন্ন দেশের মূল্য নির্ধারিত ও বিনিয়োগ তে মার্কিন ডলার এর গুরুত্ব অন্যতম। এই ডলার এর জন্যই ভারতের ঐতিহাসিক রুপির পতন গঠছে।
ভারতে রুপির দরপতনের প্রধান কারণ গুলি নিম্নরূপ :
১) আন্তর্জাতিক বাজারে ডলার এর শক্তি –
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সর্বাধিক অর্থনীতি। তাই, মার্কিন ডলার বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে সবথেকে স্টিতিশীল মুদ্রা হিসাবে আখ্যা দেয়া হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর ডলার এর মূল্য যখন সর্বাধিক এবং চাহিদা ও প্রচুর, তখন অন্যান মুদ্রা অর্থাৎ রুপীর দর কমে যাই। তাই, বর্তমানে রুপি ডলারের সামনে হার মানছে।
২) দৈদেশিক বাণিজ্য ব্যাহত –
ভারত বর্তমানে আমদানির দেশ হয়ে উঠেছে। ভারতে বেশি মূল্যের পণ্য আমদানি হয়। যেমন : তেল, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি। কিন্তু, ভারত যতটা পরিমান মূল্যের পণ্য আমদানি করছে, ওই পরিমানের পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের বিদেশি মুদ্রা কিনতে হয়, ফলে রুপীর ওপর চাপ বাড়ে।
৩) বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ভরসা নষ্ট –
যখন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতের অর্থনীতি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। তখন তারা ভারত থেকে তাদের বিনিয়োগ তুলে নেন। এর ফলে রুপির চাহিদা ক্রমে ক্রমে কমছে এবং এর দর ও কমছে।
৪) মুদ্রাস্ফীতি –
ভারতে মুদ্রাস্ফীতি হলে, ভারতে পণ্যের দাম অনেক বেড়ে যায় অন্যান দেশের তুলনায়। ফলে, ভারতের রপ্তানি কমে যায় এবং রুপির চাহিদা কমে যায়।
৫) রিজার্ভ ব্যাংক –
রিজার্ভ ব্যাংক ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারা বিভিন্ন নীতি চালু করে রুপির সিতিশীলতা বৃদ্ধি করার জন্য। কিন্তু, বিশ্বব্যাপি অর্থনীতির আমূল পরিবর্তনের ফলে রিজার্ভ ব্যাংক এর দ্বারা রুপির স্টিতিশিলতা রাখা সম্বভ হয়ে উঠে না।
ভারতীয় রুপির গুরুত্ব বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ব্যবস্থা, নিম্নরূপ :
১) রপ্তানি বাড়ানো –
- গুণমান উন্নত : ভারতের পণ্যের গুন উন্নত করে বাইরে প্রতিযোগিতা মূলক পর্যায়ে পৌঁছানো।
- সরকারের সাহায্য : সরকারে রপ্তানির দিকে নজর রাখতে হবে।
- বাণিজ্য যুক্ত চুক্তি : বিভিন্ন দেশের সাথে বাণিজ্যির চুক্তি করে, বাণিজ্যির পথ সহজ করা।
২) আমদানি হ্রাস —
স্টানীয়দের ওপর পণ্য উৎপাদন বাড়িয়ে এবং কিছু পণ্যের শুল্ক বাড়িয়ে স্টানীয় উৎপাদনকে সহায়তা করা।
৩) বৈদেশিক বিনিয়োগ –
- সহজজিকরণ : বিদেশিদের জন্য বিনিয়োগের নিয়ম সহজ করে তুলতে হবে।
- কাঠামো উন্নতি : পরিবেশের কাঠামো উন্নত করে আমদানির জন্য সহজ করে তোলা।
৪) আর্থিক দিক –
- অর্থ ঘাটতি কমানো : সরকারকে বাজেট ঘাটতির জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
- দেওয়ানি ব্যবস্থা : দেশের দেওয়ানি ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হবে।
৫) ডিজিটাল অর্থনীতি —
- ডিজিটাল পেমেন্ট : ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হবে এবং ডিজিটাল লেনদেন করতে হবে।
- স্টার্টপ বাড়ানো : ক্রমে ক্রমে নিজের স্টার্টপ বাড়াতে হবে।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদির মাধ্যমে ভারতের রুপির গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে পারে।
উপসংহার :
ভারতীয় রুপির ঐতিহাসিক পতন ঘটছে একমাত্র ভারতের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ভারসাম্য হীনতার জন্য তাই ভারতকে অর্থাৎ সরকারকে, মানুষ প্রজাতিকে সচেতন হতে হবে। অর্থনীতির দিক থেকে আমাদের সচেতন হতে হবে তাহলেই আমাদের ভারতীয় রুপি ডলার এর সামনে হার মানবে না এবং গুরুত্ব বাড়বে ভারতীয় রুপীর।।